বছর না ঘুরতেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধস

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি - বরগুনা
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২২শে ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:৫৩ অপরাহ্ন
বছর না ঘুরতেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ধস

নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার বছর পার না হতেই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে পড়েছে। এতে জলোচ্ছ্বাসের হুমকিতে পড়েছে বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের ৭ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ। দ্রুত ধসে পড়া বাঁধটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।


জানা গেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের মধ্য-সোনাখালী গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে তাফালবাড়িয়া নদী।


২০২০ সালে প্রবল স্রোতে নদীসংলগ্ন ১৩০ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়। এতে ইউনিয়নের উত্তর, দক্ষিণ, পশ্চিম সোনাখালী, গোডাঙ্গা, গোলবুনিয়া, দড়িকাটা এবং আঠারোগাছিয়া গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়।


২০২১ সালে নদীর ভাঙন রোধে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড ইমারজেন্সি প্রকল্পের আওতায় বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রাক্কলন তৈরি করে গত বছরের নভেম্বর মাসে প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৩০ মিটার বাঁধ নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান করে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পটুয়াখালীর আজাদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই কাজের কার্যাদেশ পায়।


অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের। অনিয়মের কারণেই ধসে যাওয়া বাঁধ নির্মাণের পর এক বছর যেতে না যেতে বাঁধটি নদীতে ধসে পড়েছে। ইতিমধ্যে বাঁধের একটি অংশ ধসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বড় জলোচ্ছ্বাস হলে বাঁধটি পুরোপুরি ভেঙে যাবে। এতে ইউনিয়নের সাতটি গ্রামের অন্তত ২০ হাজার মানুষ হুমকিতে পড়েছে।


আজ মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে ধসে পড়া বাঁধটি দেখতে গিয়ে কথা হয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, বড় কোনো জলোচ্ছ্বাসে বাঁধটি ভেঙে গেলে ৭টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে। বর্ষা মৌসুম আসার আগেই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটিতে ব্লক ফেলে সংস্কার করা খুবই জরুরি।


স্থানীয়রা জানান, ঠিকাদারের বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের কারণে নির্মাণের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাঁধটি ধসে পড়েছে। দ্রুত বাঁধটি সংস্কারের ব্যবস্থা না নিলে ব্যাপক ক্ষতি হবে।


ঠিকাদার স্বপন মৃধা মুঠোফোনে বলেন, বাঁধ নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়নি। নিয়ম মেনেই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রবল স্রোতে বাঁধ ধসে পড়লে আমার কী করতে পারি।


আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রিপন মুঠোফোনে বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধটি সংস্কার করা প্রয়োজন।


বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) আজিজুর রহমান সুজন বলেন, সরেজমিনে বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। দ্রুত বাঁধটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।


বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, ওই নদীতে ব্লক ফেলে বাঁধের ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।