প্রকাশ: ৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৪
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রধান অভিযুক্ত শেখ হাসিনাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। রোববার সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাকে আনা হয়।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি মামুন।
গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে এবং মামুনের রাজসাক্ষীর আবেদন গ্রহণ করে। আজকের দিনের শুনানিতে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মাধ্যমে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
মামলার প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ গঠিত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম অভিযোগ, গত বছরের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্যের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে দেড় হাজার ছাত্র-জনতা নিহত এবং প্রায় ২৫ হাজার আহত হন।
দ্বিতীয় অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের দমন করতে হেলিকপ্টার, ড্রোন এবং প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি বাস্তবায়ন করেন।
তৃতীয় অভিযোগ অনুযায়ী, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার নির্দেশও তাদের তরফ থেকে আসে। একইভাবে চানখাঁরপুলে ছয়জন এবং আশুলিয়ায় আরও ছয়জনকে হত্যার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে চতুর্থ ও পঞ্চম অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে একটি আদালত অবমাননার মামলায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের হত্যার অভিযোগসহ আরও দুটি মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ ধার্য হয়েছে। এর একটি ১২ আগস্ট এবং অন্যটি ২৪ আগস্ট।
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক মামলা যেখানে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাজসাক্ষীর মাধ্যমে আদালতে সরাসরি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে।