প্রকাশ: ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৬
হাইকোর্ট মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ঘোষণা করেছে, দেশের সকল বিচারকের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের হাতে থাকবে। এ রায়ের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আরও সুসংহত হবে। হাইকোর্ট বেঞ্চ, বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে, সকালেই এই রায় ঘোষণা শুরু করেন।
রায়ে বলা হয়েছে, নিম্ন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী এবং চতুর্থ সংশোধনীর বিধান বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের প্রভাব কমানো সম্ভব হবে।
বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত বছর রিট আবেদন করা হয়। হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চেয়েছিল, বিদ্যমান সংবিধানের এই অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না। রায় ঘোষণার মাধ্যমে এই দীর্ঘমেয়াদী বিতর্কের অবসান ঘটানো হয়েছে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং বিচারকদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনার উদ্দেশ্যে এই রায়কে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের হাতে নিয়ন্ত্রণ থাকায় বিচারিক প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা বজায় রাখা আরও শক্তিশালী হবে।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, বিচারকদের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি এবং শৃঙ্খলা সংক্রান্ত দায়িত্ব শুধুমাত্র বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের হাতে থাকায় আদালতের সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাধীনতা এবং সুষ্ঠু প্রশাসন নিশ্চিত হবে।
রিট আবেদনকারীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের প্রভাব থাকলে বিচারিক স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়ে। এই রায় দেশের বিচার ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে মূল দায়িত্ব প্রদান করা, বিচারিক প্রক্রিয়ায় জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই রায় বিচারিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে।
হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পর থেকে দেশে বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ, পদোন্নতি ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমস্ত কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে পরিচালিত হবে। এটি বিচার বিভাগের স্বতন্ত্রতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।