প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৩৫
সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব থাকলে পাঁচ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশকে সোনার খনিতে রূপান্তর করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, দেশে কাঁচামালের ঘাটতি থাকলেও শিক্ষার্থীরা জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে সেই ঘাটতি পূরণ করতে পারে। আল্লাহ কাউকে জ্ঞানের একচেটিয়া অধিকার দেননি, যে যত চেষ্টা করবে সে তত অর্জন করতে পারবে। তিনি উল্লেখ করেন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও বাজার সম্প্রসারণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিশ্চিত করা সম্ভব।
উপদেষ্টা বলেন, লেবার প্রোডাক্টিভিটি, ইউটিলিটি প্রপোরশন, লজিস্টিক এক্সিলেন্স, কস্ট টু ফিন্যান্স, এক্সেস টু ফিন্যান্স ও এক্সেস টু মার্কেট নিশ্চিত করতে পারলে কাঁচামালের ঘাটতি কাটিয়ে উঠা সম্ভব। এর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করা যাবে। শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লুতে ‘ব্যবসার ভবিষ্যৎ: উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা গবেষণা ব্যুরো আয়োজিত দু’দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নানা প্রশ্ন করেন। উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের গুরুত্ব অপরিসীম। গত রমজানে সরকারের অর্থ বিভাগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টায় নিত্যপণ্যের সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক ছিল বলে দামও স্থিতিশীল ছিল।
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর বাজারকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা চ্যালেঞ্জিং ছিল। তথাকথিত সিন্ডিকেটের অনেক সদস্য দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল। তখন সরবরাহ ঠিক রাখা কঠিন ছিল। সামগ্রিক প্রচেষ্টায় সেই সংকট উত্তরণ সম্ভব হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে ব্যবসায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের মাধ্যমে।
উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ১০ বিলিয়ন ডলার, আর বিভিন্ন দেশ ও প্রতিষ্ঠানের কাছে দায় ছিল ৬ বিলিয়ন ডলার। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সেই দায় শোধ করা হয়েছে এবং বর্তমানে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার।
ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সরকারের কাছে প্রত্যাশা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনে ক্রোনিস তৈরি হয়েছিল, যা বাজার ব্যবস্থাপনাকে অস্থিতিশীল করেছিল। ভবিষ্যতের সরকার যদি সমন্বিত উদ্যোগ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বাজার পরিচালনা করে নিরপেক্ষ সংস্কার কার্যকর করে, তাহলে বাজার ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে এবং সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. তৈয়ব চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আইয়ুব ইসলাম এবং সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মুসলিম উদ্দিন চৌধুরী।
পরে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ব্যবসা-বাণিজ্যে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।