রাবিআহ ইবনে কাব আসলামি (রা.) বলেন, আমি রাতে আল্লাহর রাসুলের (সা.) সাথে অবস্থান করতাম। তার ওজুর পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস এনে দিতাম। একদিন তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমার কাছে কিছু চাও। আমি বললাম, আমি জান্নাতে আপনার সাথে থাকতে চাই। তিনি বললেন, এ ছাড়া আর কিছু? আমি বললাম, এটাই আমি চাচ্ছি। তিনি বললেন, তাহলে বেশি বেশি সিজদা করে (নফল নামায পড়ে) এ ব্যাপারে আমার সাহায্য করো। (সহিহ মুসলিম: ১১২২)
এ হাদিস থেকে যে শিক্ষাগুলো আমরা পাই
১. রাবিআ ইবনে কাব আসলামি নবিজির (সা.) খেদমত করতেন এবং রাতে তার সাথে থাকতেন। তার অজুর পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস এনে দিতেন। তার অন্তর ছিলো জান্নাতের জন্য উন্মুখ। এ জন্য তিনি নবিজিকে (সা.) দোয়া করতে বলেছেন যেন তিনি জান্নাতে নবিজির সঙ্গী হতে পারেন। তিনি চাইলে দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী কিছু চাইতে পারতেন। সেটা তিনি করেননি। নবিজি (সা.) পরে আবার তাকে জিজ্ঞাসা করেছেন তিনি এ ছাড়া আর কিছু চান কি না। কিন্তু তিনি আবারও শুধু এটাই চেয়েছেন। মুমিনের এ রকমই দুনিয়াবিমুখ ও আখেরাতের নেয়ামতের জন্য উন্মুখ হওয়া উচিত।
২. এই হাদিস থেকে বোঝা যায় মানুষের উপকার বা খেদমতের জন্য শোকর ও কৃতজ্ঞতা আদায় করা মুস্তাহাব। নবি (সা.) রাবিআকে তার খেদমতের জন্য কোনো পুরস্কার দিতে চেয়েছিলেন। আশআস ইবনে কায়েস কিনদি ও আবু হোরায়রা রা. থেকে বর্ণিত রয়েছে রাসুল সা. বলেছেন, ‘যে মানুষের কৃতজ্ঞতা আদায় করলো না, সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতাও আদায় করলো না। (মুসনাদে আহমদ)। যে উপকার করে তার বদলায় উপকার করা, তার শোকর আদায় করা উত্তম স্বভাবের অন্তর্ভুক্ত ও নবিজির (সা.) আদর্শ। মানুষের উপকার অস্বীকার করা, কৃতজ্ঞতা আদায় না করা খারাপ স্বভাব যা থেকে মুমিনদের বেঁচে থাকা উচিত।
৩. যেহেতু নেক আমল ছাড়া জান্নাত লাভ করা যাবে না, তাই নবিজি (সা.) রাবিআকে নির্দেশ দিয়েছেন বেশি বেশি নামাজ আদায় করতে। নবিজির (সা.) এই নির্দেশনা থেকে বোঝা যায়, ফরজ আদায়ের পাশাপাশি আমাদেরও যতো বেশি সম্ভব নফল নামাজ আদায় করা উচিত। নামাজের নিষিদ্ধ সময়গুলো ছাড়া যে কোনো সময় নফল নামাজ আদায় করা যায়। নফল নামাজ আদায়ের উত্তম সময় হলো রাত। রাসুল সা, বলেছেন,
اسْتَقِيمُوا وَلَنْ تُحْصُوا وَاعْلَمُوا أَنَّ خَيْرَ أَعْمَالِكُمُ الصَّلاَةُ
তোমরা দ্বীনের উপর অবিচল থাকো, যদিও তোমরা আয়ত্তে রাখতে পারবে না। জেনে রাখো, তোমাদের আমলসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম হল নামাজ। (ইবনে মাজা) মুমিনদের কর্তব্য দিন ও রাতের নফল নামাজগুলো যথাসাধ্য আদায় করা। এগুলো মানুষকে আল্লাহর কাছে নিয়ে যায় ও জান্নাতের নিকটবর্তী করে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।