টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলাটি যমুনা নদী তীরবর্তী হওয়ায় ঘন কুয়াশা সহ শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। গত কয়েকদিন ধরে দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আর শীতের আগমনের পূর্বেই লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভূঞাপুরের লেপ-তোষকের কারিগররা। কারণ প্রতিটি এলাকাতেই শীত জেকে বসার আগেই শীত মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ওই সব লেপ-তোষক তৈরির দোকানে ভিড় করছে এ অঞ্চলের মানুষ। শীতের কারণে অনেকে শীত নিবারণের জন্য হালকা কাঁথা ও কম্বল ব্যবহার শুরু করছেন।
তুলা পিটিয়ে নানা রঙ-বেরঙের কাপড়ের তৈরি কাভারে মুড়িয়ে সুঁই-সুতার ফোড়ে তৈরি করা হয় লেপ-তোষক। অধিক মুনাফা ও বেশি বিক্রির আশায় দিন-রাত পরিশ্রম করছেন লেপ-তোষকের কারিগররা। ক্রেতারাও লেপ-তোষক কেনার জন্য ভিড় করছেন ভূঞাপুরের বিভিন্ন দোকানগুলোতে। যথাসময়ে লেপ-তোষক সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন কারিগররা। কারিগররা বছরে মাত্র দুই-তিন মাসের শীত মৌসুমে লেপ-তোষক তৈরি করে সারা বছর সংসার চালানোর মতো অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করেন।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে গিয়ে দেখা যায় লেপ তোষক তৈরির কারিগররা অনেক ব্যস্ত সময় পার করছে। কারিগর শরীফ ও সুজন বলেন, সবে মাত্র শীত পড়তে শুরু করেছে। কিছুদিন পরে শীতের তীব্রতা বাড়লে ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়বে। ক্রেতাদের এই আসা যাওয়া চলবে পুরো শীত জুড়ে। আমরা কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিরামবিহীন ভাবে লেপ তোষক তৈরি করছি। শীতের কয়েক মাস আমরা ব্যস্ত সময় পার করি। প্রতিদিন একজন কারিগর ৩-৪ টি লেপ তৈরি করতে পারি। প্রতি লেপ-তোষকে ২০০ টাকা করে মজুরী পাই। গোবিন্দাসী বাজারের লেপ-তোষক ব্যবসায়ী রাজু ও ইউসুফ জানান, এ বছর জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় স্বাভাবিক ভাবেই লেপ-তোষক তৈরিতে খরচ একশ থেকে দুইশ টাকা বেড়ে গেছে। আর একটি লেপ-তোষক বিক্রি করে তাদের ২'শ থেকে ৩'শ টাকা লাভ হয়।
ব্যবসায়ী মোঃ হুরমুজ আলী ও ইসমাইল হোসেন জানায়, শীতের আগমনীর সাথে ভূঞাপুরের বিভিন্ন লেপ-তোষকের কারিগর ও ব্যবসায়ীদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় হাটবাজার গুলোতে জাজিম, বালিশ, লেপ, তোষক তৈরি ও বিক্রির কাজে কারিগর ও ব্যবসায়ীরা নিয়োজিত। ৪-৫ হাত লেপের দাম পড়ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। আর তোষক তৈরিতে দাম পড়ছে ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকার মধ্যে। অনেকসময় লেপ-তোষকের দাম কম-বেশি । কাপড়ের মান ও তুলার প্রকারভেদে বুঝে লেপ-তোষকের দাম নির্ধারণ করা হয়।
তবে কেউ কেউ বলছেন, এবার তুলার দাম বেশি। কালার তুলা প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিশালী তুলা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, সিম্পল তুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিমুল তুলা ৩৫০ থেকে ২৬০ টাকা ও সাদা তুলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোষক তৈরি ও বিক্রি আরও বাড়বে এমনটি প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।