জৈষ্ঠ্যমাস মধুমাস এমাসে বাজারে সবধরনের ফল দেখা যায়। প্রতিনিয়তই বাড়ছে তাপদাহ। গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে। গ্রীষ্মের তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে নানারকম ফল খাচ্ছে মানুষ। এসব ফলের তালিকায় রয়েছে তালের শাঁসও। সুস্বাদু তালের শাঁস শরীর-মনকে সতেজ রাখে। তাই তো হাকিমপুর উপজেলার হাটবাজারে তালের শাঁসের বেশ কদর বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) সাপ্তাহিক হাটের দিনে হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এ সময়ে আম, কলা, লিচুসহ সবরকম ফল বাজারে এসেছে। তেমনি এ গরমে বাজারে এসে গেছে কচি তাল। কচি তালের শাঁস পছন্দ করে না এমন মানুষ নেই বললেই চলে। তা ছাড়া পুষ্টিগুণে ভরা মানবদেহের জন্য উপকারী তালের শাঁস গরমে মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। পাশাপাশি মৌসুমি ফল হিসেবে তালের শাঁস অবদান রাখছে গ্রামীণ অর্থনীতিতেও। যদিও কালের বিবর্তনে উপজেলার গ্রামাঞ্চলে কমে গেছে তাল গাছের সংখ্যা। পৌর শহরে এবং উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে খুচরা বিক্রেতাদের কচি তাল বিক্রি করতেও দেখা গেছে। তবে এবারে খুচরা বিক্রেতারা তাল শাঁস চড়া দামে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তারপরও সুস্বাদু তাল শাঁসের জন্য ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছে বিক্রেতাদের কাছে।
কথা হয় তাল শাঁসের খুচরা বিক্রেতা আবুল কালাম এর সাথে তিনি বলেন, বছরের অন্যান্য সময় দিনমজুরের কাজ করলেও এ সময়টাতে তিনি তার ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গ্রাম গঞ্জ থেকে তাল গাছ ডেকে নিয়ে বিভিন্ন হাটবাজারে কচি তালের শাঁস বিক্রি করে থাকেন। আগে তাল গাছ ডেকে নিতাম কম দাম পরতো কম দামে বিক্রি করতাম। গ্রাম গঞ্জে তাল গাছ কমে যাওয়ায় আগের মতো কম দামে তাল গাছ পাওয়া যাচ্ছে না। এবার পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে থেকে চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। একটি তাল বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়, আকারে বড় তাল ২০-২৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ১-২ হাজার টাকার তালের শাঁস বিক্রি করি। এতে ৫-৬শ টাকা লাভ থাকে, যা দিয়ে আমাদের সংসার মোটামুটি ভালোভাবেই চলে যায়।
কথা হয় পৌর শহরের গোডাউন মোড়ে তালের শাঁস বিক্রেতা মোখলেস হোসেন এর সাথে তিনি বলেন, মৌসুমের শুরু তাই কম তাল নিয়ে এসেছি। তবে কচি তাল শাঁসের চাহিদা আছে তাই বিক্রি ও মোটামুটি ভালো হচ্ছে। এবার তালের ফলন অনেকটাই কম। গেলো বছর ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা দিয়ে তাল গাছ ক্রয় করতেন ব্যবসায়ীরা। তবে বর্তমান গাছের দাম আগের মতোই আছে, কিন্তু ফলন অনেক কম। যার কারণে তালশাঁসের দাম বেশি। গত বছর প্রতিটি তাল শাঁস বিক্রি করেছিলাম ৫ থেকে ৬ টাকা পিচ। এ বছর বিক্রি করছি ৭ থেকে ৮ টাকা পিচ।
তাল ব্যবসায়ী মোখলেছ হোসেন বলেন, তিলকপুর থেকে তাল নিয়ে হিলি বাজারে এসেছি। প্রায় ১০ বছর ধরে এই তালশাঁসের ব্যবসা করছি। গত কয়েক বছর ধরে হিলির বিভিন্ন স্থানে তালশাঁস বিক্রি করি। আজ বেশি আনিনি, অল্প করে এনেছি। সবাই কেনার জন্য আসছে, তবে দাম বেশি হওয়াতে কম করে নিচ্ছে সবাই।
কথা হয় তালশাঁস কিনতে আসা লুৎফর রহমানের সাথে তিনি বলেন, প্রচন্ড গরমে তালের শাঁস স্বাদে ভরা। আমার পরিবারের সবার পছন্দ, তাই কচি তালশাঁস কিনতে বাজারে এসেছি। দেখছি এবারে দাম অনেক বেশি, পরিবারের জন্য ১০টির অর্ডার দিয়েছি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।