শিকলবন্দি জীবন থেকে মুক্তি চায় আম্বিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ২১শে আগস্ট ২০২২ ০৭:৩৮ অপরাহ্ন
শিকলবন্দি জীবন থেকে মুক্তি চায় আম্বিয়া

শিকলে বন্দি আম্বিয়া খাতুনের জীবন। অর্থ নয়, প্রয়োজন চিকিৎসার। লোহার শিকল থেকে মুক্ত হতে প্রয়োজন একটু সহানুভূতি, একটু আশ্রয়। অভাবের সংসারে যেখানে নুন আনতে পানতা ফুরায় অবস্থা সেখানে মানসিক ভারসাম্যহীন সন্তানের চিকিৎসার খরচের যোগান দুঃসাধ্য। তাই অর্থের অভাবে প্রতিবন্ধী আম্বিয়ার চিকিৎসা করাতে পারছেন না দরিদ্র মা।


মানসিক প্রতিবন্ধী আম্বিয়া (২২) সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের দক্ষিণ উস্তিংঙ্গেরগাঁও গ্রামের দিনমজুর মৃত আবু বকর সিদ্দিকের মেয়ে।


জানা যায়, আম্বিয়া খাতুন ৮ বছর পূর্বে মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেনি তার দরিদ্র বাবা-মা। মানসিক ভারসাম্যহীন আম্বিয়া খাতুন মানুষকে মারধর করে ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। তার আক্রমণ থেকে বাঁচতে এবং হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে হাতে শিকল পরিয়ে রাখেন তার পরিবার।


কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিত্তবানদের প্রতি সন্তানের মানসিক চিকিৎসার জন্য আকুতি জানিয়েছেন আম্বিয়ার মা।


বাবা দিনমজুর মৃত আবু বকর সিদ্দিকের ২ ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে আম্বিয়া তৃতীয়। দিন মজুরের কাজ করে কোনোরকম চলে তাদের সংসার। তাই টাকার অভাবে করতে পারছেন না চিকিৎসা।


আম্বিয়া খাতুনের ছোট ভাই মোজাহিদ হোসেন বলেন, আমার বোন হারিয়ে যাবে বলে তাকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে রাখি। যদি হারিয়ে যায় তাহলে কোথায় খুঁজব বোনকে। টাকা নেই, তাই মানসিক চিকিৎসককে দেখাতে করাতে পারিনি। আমরা টাকা চাই না। কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি আমার বোনকে চিকিৎসা করালে আমরা কৃতজ্ঞ হতাম।


মানসিক ভারসাম্যহীন আম্বিয়া খাতুনের মা রহিমা খাতুন জানান, আম্বিয়া ৮ বছর আগে হঠাৎ মানসিক রোগে আক্রান্ত  হয়। টাকার অভাবে আমার মেয়েকে চিকিৎসা করাতে না পেরে গ্রাম্য ডাক্তার, কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। কিন্তু এতে মেয়ের মানসিক সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।


তিনি আরও বলেন, মানসিক চিকিৎসক দিয়ে উন্নত চিকিৎসা করালে আমার মেয়ে আম্বিয়া হয়তো সুস্থ হয়ে যাবে।


জেলা সিভিল সার্জন আহমদ হোসেন বলেন, মানসিক রোগ চিকিৎসায় ভালো হয়। শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। খোঁজ নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন তিনি।