সরকারি উদ্যোগে ৯ বিঘা জমির উপর রয়েছে একাধিক মুরগি পালন ও প্রজননের সেড। রয়েছে প্রশাসনিক ও আবাসিক ভবন। রয়েছে কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এসকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী পাচ্ছে নিয়মিত বেতন-ভাতা। শুধু নেই মুরগী। অলস সময় কাঁটিয়ে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন রাজবাড়ী জেলার সরকারী মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের কর্মকর্তা-কর্মচারী।
রাজবাড়ী জেলার সরকারী মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামার সরেজমিন ঘুরে এমনি চিত্র দেখা যায়।
কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮২ সালে রাজবাড়ী জেলার প্রাণ কেন্দ্র মহাসড়কের পাশে ভবানীপুর ৯বিঘা জমির উপর ৪টি শেড দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকারি এই খামারে প্রশাসনিক ভবন, ব্যবস্থাপকের বাসভবন অতিথি কক্ষ, বিক্রয় কেন্দ্রসহ রয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাধিক আবাসিক ভবন। খামার ঘুরে দেখা যায়, মুরগি পালনের সেডগুলো অকেজো হয়ে পরে আছে। ভবনের চার পাশ দিয়ে ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। দেয়ালগুলোতে শেওলা পরে আছে। সেডের টিনগুলো দুমতে-মুচরে গেছে। আবাসিক ভবন ও অতিথি কক্ষ দেখে মনে হয় বছরের পর বছর তালা খোলা হয়না। দরজার সামনে জঙ্গলের স্তুপ রয়েছে। মুরগির খাবারের জন্য গোডাউন ভর্তি রয়েছে অনেক খাবার। কিন্ত জানালাগুলো খুলে খুলে পরছে। কক্ষের মধ্যে রাখা মুরগির ফিড নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ যেন কোন ভুতুরে পরিবেশ। দেখে মনে হচ্ছে একটি বন বিভাগের জঙ্গলে এসেছি।
রাজবাড়ী সরকারী মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের গেটের পাশে অবস্থিত চায়ের দোকানদার মনির হোসেন জানান, এই খামারে কত বছর হাঁস-মুরগি উৎপাদন হয় না সেটা মনে নেই। প্রায় ১০/১২ বছর অকেজো হয়ে পরে আছে। সকাল-বিকেল শুধু অফিস খোলা দেখি। এরা অফিসে বসে কি করেন সেটা বলতে পারবো না।
পলাশ নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, এই সরকারী মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের নামে এই বাসষ্ট্যান্ডের নাম হয়েছে “মুরগি’র ফার্ম”। তবে এই ফার্মে বর্তমান হাঁস-মুরগি লালন-পালন বন্ধ রয়েছে। ফার্মের ভিতরে জঙ্গলে একাকার। এই অকেজো মুরগি ফার্মটি জেলাবাসীর কোন কাজে আসছেনা।
একাধিক ক্ষুদ্র খামারী অভিযোগ করে বলেন, নামে মাত্র রাজবাড়ীতে একটি সরকারি হাঁস-মুরগির খামার রয়েছে। এই খামারের এলাকাবাসী ও কোন খামারিদের উপকারে আসে না। তারা আরোও জানান, খামারটি উন্নয়ন করে আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। তাহলে জেলার ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
রাজবাড়ী সরকারী মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, ১৯৮২ সালে জেলায় এই হাঁস-মুরগির ফার্ম তৈরি করা হয়েছে। তবে পুরাতন মডেলের সেডগুলো বিকল হয়ে গেছে। সরকারী মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারটি আধুনিকায়ন করার জন্য ২৭কোটি টাকার একটি চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আধুনিকায়ন কাজ হলে এখানে হ্যাচারীও করা হবে। তখন জেলার ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরন করা সম্ভব হবে। এই কর্মকর্তাসক সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে বর্তমান ৭জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত আছেন। কাজ না থাকায় অলস সময় কাঁটাতে হয় তাদের।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।