দুই হাতে ভর করে চলা প্রতিবন্ধী সোহাগের সংসার চলে রিকশা চালিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি (ঝালকাঠি)
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:১৪ অপরাহ্ন
দুই হাতে ভর করে চলা প্রতিবন্ধী সোহাগের সংসার চলে রিকশা চালিয়ে

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের শীতলপাড়া এলাকার মৃত গনি হাওলাদারের ছেলে অসহায় হতভাগা প্রতিবন্ধী সোহাগ হাওলাদার (৩৫)। তার বাড়িতে নাই থাকার মতো একটি ঘর ফলে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সোহাগকে। সোহাগ জন্মের পর থেকে প্রতিবন্ধী। ছোটবেলা থেকেই টাকার অভাবে সুচিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি তার। 



বর্তমানে সে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। তার রয়েছে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। তাদের ভরণপোষণ যোগাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হচ্ছে দুই হাতে ভর করে চলা সোহাগ হাওলাদারকে। রিকশা চালিয়ে যা আয় তা দিয়ে বাসা ভাড়া ও কোন রকম সংসার চলে। নলছিটি পৌরসভা থেকে এরআগে ভাতা পেলেও দীর্ঘদিন ধরে সেটিও বন্ধ রয়েছে। 



প্রতিবন্ধী সোহাগ হাওলাদার বলেন, ছোটবেলায় টাইফয়েড জ্বর হয়েছিল এরপর থেকে এরকম হয়ে গেছি। আমার দুটি সন্তান রয়েছে। আমার ঘরবাড়ি কিছুই নাই। তাদেরকে নিয়ে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে বেঁচে আছি। রিকশা চালাতে না পারলে সংসার চলে না। আমি এর আগে সরকারি সহয়তা পেতাম সেটিও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে আমার সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। 



সোহাগের মামা ইউসুফ আলী হাওলাদার বলেন, সোহাগ তার স্ত্রী সন্তান নিয়ে ঢাকা রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। আমাদেরও আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো না যে তাদের সহয়তা করবো। সরকারি সুযোগ সুবিধা পেলে সোহাগের খুবই উপকার হতো। 



নলছিটি পৌরসভার ১, ২ ও ৩, নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর খাদিজা পারভীন বলেন, সোহাগ হাওলাদার খুবই অসহায়। সে এর আগে ঢাকায় থাকতো বর্তমানে বাড়িতে এসেছে। তার থাকার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এর আগে তিনি সরকারি ভাতা পেতো কি কারণে সেটি বন্ধ আছে সেটা আমার জানা নেই। তাই উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের কাছে নিয়ে গেছিলাম ভাতাটা চালু করার জন্য। 



নলছিটি উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, সোহাগ হাওলাদার এর আগে ভাতার আওতায় ছিলেন। ২০০১ সালে যখন এনআইসি করা হয় তখন তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। এখন আবার তার ভাতা চালু করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় যদি আনা যায় তাহলে কোন একটা উপকরণ দিয়ে তাকে স্বাবলম্বী করা যাবে।



নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, সোহাগ হাওলাদারকে একটি আবেদন দিতে বলছি। তাকে সরকারি ভাবে সহয়তা করা হবে।