প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৬
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ঠাকুরগাঁও সার্কিট হাউজ চত্বরে। এসময় গাড়ি চালক মোঃ জয়নাল আবেদীনকে পুলিশ আটক করেছে। উদ্ধারকৃত ওষুধগুলো প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত হওয়া সত্ত্বেও প্রান্তিক খামারিদের কাছে পৌঁছায়নি।
এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জবাইদুল কবিরকে আহবায়ক করে গঠিত এই কমিটি দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। এর মাধ্যমে সরকারি ওষুধের অপব্যবহার এবং দুর্নীতি শনাক্ত করা হবে।
ঘটনার সময় মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানার সভাপতিত্বে সার্কিট হাউজে জেলা মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভারপ্রাপ্ত মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুর রউফ, জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ইজাহার আহম্মেদ, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরাফাত উদ্দীন আহম্মেদ, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মৌসুমী আখতারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অংশ নেওয়া খামারিরা অভিযোগ করেন, সরকারি ওষুধ খামারিদের জন্য বরাদ্দ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তা প্রান্তিক খামারিদের পৌঁছে দেওয়া হয় না। কিছু কর্মকর্তা ওষুধ কোম্পানির সাথে যোগসাজশ করে বরাদ্দ ওষুধ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ কারণে প্রান্তিক খামারিরা বঞ্চিত হচ্ছে এবং সরকারের অর্থ অপব্যবহৃত হচ্ছে।
তল্লাসি চলাকালে দেখা যায়, সরকারি ওষুধগুলো গাড়ির পেছনে রাখা থাকায় মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যায়। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম ফেরদৌস ওষুধগুলো জব্দ করেন। পাশাপাশি তদন্ত সাপেক্ষে ড্রাইভার জয়নাল আবেদিনকে সাময়িকভাবে আটক করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন আগামী সাত দিন ডাঃ মৌসুমী আখতারের জেলা ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তদন্তে তার ভূমিকা এবং দায়িত্বহীনতা শনাক্ত করা হবে। প্রান্তিক খামারিদের অধিকার সুরক্ষিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে কমিটি।
এই ঘটনায় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্পষ্ট করেছেন, সরকারি ওষুধের অপব্যবহার যেকোনো মূল্যে রোধ করা হবে। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনের মাধ্যমে প্রান্তিক খামারিদের সেবা নিশ্চিত করা হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়মের পুনরাবৃত্তি রোধ করা হবে।