প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:২৫
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ২৩ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের অমানবিক আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। হামাস উৎখাত ও জিম্মি মুক্তির নামে প্রতিদিনই গাজার বিভিন্ন এলাকায় চলছে তীব্র হামলা ও নির্যাতন, যার ফলে এ অঞ্চলের বাসিন্দারা একটানা শান্তির একটি দিনও পার করতে পারছে না। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, প্রতিটি দিন নতুন রক্তক্ষয় ঘটছে এবং জীবনযাত্রা ক্রমশ বিপর্যস্ত হচ্ছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থন পাওয়ার পর আরও বেপরোয়া আকার নিয়েছে। প্রতিদিনই হামলার তীব্রতা বাড়ছে এবং এসব হামলায় সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্রসহ গাজার বিভিন্ন অংশে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে। এতে নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬২ জন ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে গাজা সিটিতে প্রাণ হারিয়েছে ৪৯ জন, যা সংখ্যালঘু হলেও ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞের একটি অংশ।
শনিবার দিনের মধ্যে গাজা সিটিতে অন্তত ছয় হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। দখলদার বাহিনীর অব্যাহত বোমাবর্ষণ ও ঘনিষ্ঠ অবরোধের কারণে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাওয়া তীব্র চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, নাগরিকরা অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন। আবাসিক ভবন ও জনসাধারণের স্থাপনায় প্রতি ১০ থেকে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে বোমা ফেলা হচ্ছে, ফলে মানুষদের নিরাপদে সরানোর জন্য পর্যাপ্ত সময়ও দেওয়া হচ্ছে না।
আল জাজিরার সংবাদদাতা হানি মাহমুদ জানান, হামলার কারণে এলাকাবাসীর জীবনমান তীব্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বড় ঝুঁকিতে রয়েছেন। গাজার জনগণ নিরাপদ আশ্রয় এবং জরুরি মানবিক সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ইসরায়েলি বাহিনীকে শান্তি ও মানবিক অধিকার রক্ষা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। তবে দখলদার বাহিনীর হামলা অব্যাহত থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ক্রমশ বাড়ছে এবং মানুষদের জীবনকে বিপদে ফেলে দিচ্ছে।