যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনিকে লিবিয়ায় স্থানান্তরের পরিকল্পনা করছে বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের জন্য লিবিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা শুরু করেছে ওয়াশিংটন।
সূত্রগুলো জানায়, লিবিয়ার সরকারের সঙ্গে এখনো কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি, তবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আর্থিক সহায়তা, বিনাম্বলে আবাসন ও শিক্ষাবৃত্তির মতো প্রণোদনা দিতে প্রস্তুত।
এনবিসি নিউজের প্রতিবেদন প্রকাশের পর মার্কিন প্রশাসনের এক মুখপাত্র এটিকে 'অসত্য' বলে আখ্যায়িত করেন। তবে প্রতিবেদন তৈরির সময় সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো দাবি করেছিল, পরিকল্পনাটি উচ্চপর্যায়ে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে।
গাজাভিত্তিক সংগঠন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা বাসেম নাইম জানান, তারা এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা সম্পর্কে অবগত নন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনিরা তাদের ভূমির সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত এবং মাতৃভূমি ছেড়ে যেতে রাজি হবে না।
২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়া গৃহযুদ্ধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতায় জর্জরিত। বর্তমানে দেশটিতে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী সরকার সক্রিয় রয়েছে, যাদের কেউই এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
১০ লাখ মানুষকে স্থানান্তর একটি জটিল প্রক্রিয়া। আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে পরিবহনের পরিকল্পনা করা হলেও প্রতিটি পদ্ধতিই চ্যালেঞ্জিং। গাজায় কোনো কার্যকর বিমানবন্দর না থাকায় পরিবহন প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প গাজাকে 'মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা' হিসেবে গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন। সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্য সফরেও তিনি ফিলিস্তিনিদের জন্য 'নিরাপদ স্থান' খুঁজে বের করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
বর্তমানে লিবিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ৭৩ লাখ। অতিরিক্ত ১০ লাখ মানুষের চাপ দেশটির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়া ইতোমধ্যেই সংকটে জর্জরিত।