প্রকাশ: ৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:৫৬
গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রেক্ষাপটে অস্ত্রত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে—মার্কিন কর্মকর্তার এমন দাবিকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, যতদিন ফিলিস্তিনিদের জাতীয় অধিকার নিশ্চিত না হয় এবং পূর্ণ স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হয়, ততদিন সশস্ত্র প্রতিরোধ চলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সম্প্রতি ইসরাইলি জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠকে দাবি করেন, হামাস অস্ত্রত্যাগে প্রস্তুতি দেখিয়েছে। এই মন্তব্য প্রকাশ করে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ। তবে হামাস দ্রুত এক বিবৃতিতে এসব দাবি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বলে নিন্দা জানায়।
হামাস জানায়, ইসরাইলি দখলদারিত্ব যেহেতু এখনো চলছে, সেহেতু তাদের সশস্ত্র লড়াই একটি জাতীয় ও বৈধ প্রতিরোধ। তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে।
মার্কিন দূতের গাজা সফর নিয়েও ক্ষোভ জানায় হামাস। তারা উইটকফের সফরকে ‘পরিকল্পিত প্রদর্শনী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছে, এ সফরের উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং সাধারণ জনগণকে গাজার বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে ভুল ধারণা দেওয়া।
এদিকে উইটকফের গাজা সফরের পরদিনই তিনি তেল আবিবে ইসরাইলি জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এই ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে মনে করছে ফিলিস্তিনি পক্ষ।
আরব বিশ্বের একাধিক দেশ সম্প্রতি হামাসকে গাজার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে এবং অস্ত্র পরিত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়েছে। তবে হামাসের অবস্থান স্পষ্ট—স্বাধীনতা ছাড়া কোনো সমঝোতা নয়।
অন্যদিকে, ফ্রান্স ও কানাডাসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, ইসরাইল যদি নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে তারাও স্বীকৃতি দেবে।
এই প্রেক্ষাপটে হামাসের অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, অস্ত্রত্যাগ নয়, বরং স্বাধীনতার দাবি নিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে হামাস আরও সক্রিয় হচ্ছে।