প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ৯:৪১
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর টানা হামলায় একদিনে অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৬১ জন। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি বিমান ও স্থল হামলা উত্তরাঞ্চলে আরও তীব্র আকার ধারণ করে। শুধু গাজা সিটির উত্তরাংশেই ৬১ জন নিহত হন। এছাড়া ত্রাণ বিতরণের চেষ্টা চালানো লোকজনও এ হামলার শিকার হয়েছেন।
গাজা সিটির উত্তরে ত্রাণ নিতে আসা মানুষের ভিড়ের মধ্যেই ইসরাইলি বিমান হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হন। দক্ষিণ গাজার নাসের হাসপাতালের তথ্যমতে, রাফাহ’র উত্তরে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে সেনাদের গুলিতে মারা যান অন্তত ১৬ জন।
জরুরি ও অ্যাম্বুলেন্স সেবার হিসেবে, উত্তরে ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা মানুষের ওপর গুলিতে আরও ১৪ জন নিহত এবং ১১৩ জন আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে খাদ্যের সন্ধানে থাকা অন্তত ৩৭ জন বুধবার প্রাণ হারান।
এদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টির কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন শিশুসহ আরও আটজন মারা গেছেন। এর ফলে উপত্যকায় দুর্ভিক্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩৫ জনে, যার মধ্যে ১০৬ জন শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলি ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালালে ১ হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরাইলি বাহিনী গাজায় টানা অভিযান শুরু করে, যা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে।
গত ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মধ্যস্থতাকারী দেশের চাপে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, দুই মাস না যেতেই ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় হামলা শুরু করে ইসরাইলি সেনারা।
উল্লেখযোগ্যভাবে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে মামলা চলছে।