প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৯
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার আগামী ২৩ আগস্ট ঢাকায় সফর করবেন। এই সফর চলমান সময়ে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের দ্রুত উন্নয়ন এবং উষ্ণতার প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে দুই দেশের সম্পর্ক বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে ওঠানামার মধ্যে ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তা নতুনভাবে জোরদার হচ্ছে।
ইসহাক দার এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলেও ঢাকায় আসার পরিকল্পনা করেছিলেন, তবে তখন ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার কারণে সফর স্থগিত হয়। এবার নতুন সূচি অনুযায়ী, তিনি বাংলাদেশে এসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য আলোচনা করবেন।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একসময় একই দেশের অংশ হলেও ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। বিচ্ছেদের পর দুই দেশের সম্পর্ক দীর্ঘ সময় নানা কারণে জটিল ছিল। তবে গত বছরের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে সম্পর্কের নতুন ধারা সৃষ্টি হয়েছে। বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে দুই পক্ষের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
সাম্প্রতিককালে দুটি দেশের মধ্যে ভিসামুক্ত প্রবেশের ওপর নীতিগত সম্মতি হয়েছে, যা পারস্পরিক যাতায়াত আরও সহজ করবে। এছাড়া এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালোচ ঢাকায় সফর করেন এবং মার্চে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপ করেন।
বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারিতে দীর্ঘ বিরতির পর সরাসরি বাণিজ্য শুরু হয় এবং পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়। এছাড়া দুই দেশের সেনাবাহিনী “টেকসই অংশীদারত্ব” বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে বাইরের প্রভাব মোকাবিলায়।
২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে করাচি থেকে চট্টগ্রামে একটি কনটেইনার জাহাজ পৌঁছায়, যা কয়েক দশকের মধ্যে দুই দেশের প্রথম সরাসরি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল হিসেবে বিবেচিত।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মিসরের কায়রোতে এক বৈঠক হয়, যেখানে ১৯৭১ সালের বিচ্ছেদের সময় থেকে ঝুলে থাকা সমস্যাগুলো সমাধানের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে এই নতুন কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আগামী দিনে আরও উন্নতি এবং স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সংলাপ বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও সমৃদ্ধিতে অবদান রাখা সম্ভব হবে।