প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ৯:৫৩
উপমহাদেশে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। সামরিক প্রস্তুতি, রাজনৈতিক ইঙ্গিত এবং কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক অস্থির হয়ে উঠেছে। ৪ আগস্ট ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সতর্ক করেছেন, দেশের পরবর্তী যুদ্ধ প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত শুরু হতে পারে এবং তা মোকাবিলায় প্রয়োজন পুরো জাতির সম্মিলিত শক্তি। তিনি জানিয়েছেন, আগামী যুদ্ধ আরও বড় আকার ধারণ করতে পারে এবং কোন দেশ একা লড়বে নাকি অন্য দেশের সমর্থন নেবে, তা এখনও অজানা।
এরপর সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে বসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি পাকিস্তান অস্তিত্ব সংকটে পড়ে, তবে তারা বিশ্বের অর্ধেককে সঙ্গে নিয়ে ধ্বংস হবে। মুনির কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভারতের সিন্ধুনদীর ওপর বাঁধ বা অন্যান্য অবকাঠামো তৈরি হলে তা ধ্বংস করতে পাকিস্তান দ্বিধা করবে না।
এই হুঁশিয়ারি শুধু সেনা স্তরে সীমাবদ্ধ নয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও আন্তর্জাতিক যুব দিবসে একই ধরনের বার্তা দিয়েছেন। তিনি ভারতের পরিকল্পিত পানি আটকে রাখার চেষ্টা হলে কঠোর শিক্ষা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এতে উপমহাদেশে যুদ্ধের সম্ভাব্য প্রভাব ও মানবিক ঝুঁকি আরও বাড়ছে।
ভারতের রাজনৈতিক পরিস্থিতিও উত্তেজনাকে জোর দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপে পড়েছেন। দেশীয় জনমত মোদিকে চাপে ফেলায় সামরিক উত্তেজনাকেই কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা দেখা যাচ্ছে।
ভারতের পক্ষ থেকেও পাকিস্তানের পারমাণবিক হুঁশিয়ারি তীব্রভাবে নিন্দা জানানো হয়েছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রণালয় ও মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানান, পাকিস্তানের পারমাণবিক হুমকি দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং এটি পুরনো অভ্যাসের পুনরাবৃত্তি। নয়াদিল্লি কখনোই পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের কাছে নতিস্বীকার করবে না এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে।
উপমহাদেশে সাম্প্রতিক সময়ের ধোঁয়াশা, হুমকির বার্তা এবং কূটনৈতিক উত্তেজনা নির্দেশ করছে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্ভাব্য ‘বড় যুদ্ধের’ ছায়া ক্রমশ ঘন হচ্ছে। ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি এড়াতে দুই দেশকেই কূটনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজে নিতে হবে।