প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৫, ১০:২৬
ইসলামে জীবিকা অর্জনের পথকে শুধু অর্থনৈতিক নয়, আধ্যাত্মিক দৃষ্টিতেও দেখা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “হে ঈমানদারগণ! একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করো না; তবে পারস্পরিক সম্মতিতে বৈধ বাণিজ্যের মাধ্যমে ভক্ষণ করো” (সূরা নিসা: ২৯)। এই আয়াত আমাদের শেখায় যে বাণিজ্য ও পেশাগত জীবনে সততা শুধু নৈতিকতা নয় বরং আল্লাহর নির্দেশ।
আজকের সমাজে অসততা, প্রতারণা ও অতিরিক্ত লাভের নেশায় অনেকেই সঠিক পথ থেকে সরে যাচ্ছে। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি শুধু হারাম আয় নয় বরং সমাজের জন্যও বড় ধরনের অকল্যাণ বয়ে আনে। ব্যবসায়িক লেনদেনে সততা বজায় রাখা মানে মানুষের আস্থা অর্জন করা এবং আল্লাহর রহমত লাভ করা।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “সৎ ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী নবী, সিদ্দীক ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে” (তিরমিজি)। এটি একটি বিশাল সম্মান এবং প্রমাণ করে যে ব্যবসায়িক সততা ইসলামে কত উচ্চ মর্যাদার অধিকারী।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যায়, মজুদদারি ও ভেজাল পণ্যের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ানো হচ্ছে। অথচ ইসলাম এসব কর্মকাণ্ডকে স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করেছে। রাসুল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি খাদ্যসামগ্রী মজুদ করে, সে পাপী” (মুসলিম)।
সৎ ব্যবসা শুধু দুনিয়ার বরকত নয়, পরকালেও সফলতার নিশ্চয়তা দেয়। সততার মাধ্যমে অর্জিত আয় থেকে পরিবারকে খাওয়ানো, গরিবদের সহায়তা করা এবং সৎ কাজে ব্যয় করা—এগুলো আল্লাহর নৈকট্য বাড়ায়।
তবে অসৎ পথে আয়কৃত অর্থে বরকত থাকে না। অনেক সময় দেখা যায়, বিপুল সম্পদ অর্জনের পরও মনে শান্তি নেই, পরিবারে অশান্তি বিরাজ করছে। ইসলাম এটাকে ‘বরকতের অভাব’ বলে ব্যাখ্যা করেছে।
আমরা যদি সমাজে ন্যায়নিষ্ঠ ব্যবসা ও লেনদেন চালু করতে পারি, তবে শুধু ব্যক্তিগত জীবন নয়, জাতীয় অর্থনীতিতেও স্থিতিশীলতা আসবে। প্রতারণামুক্ত বাজারব্যবস্থা মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনবে এবং দারিদ্র্য হ্রাসে বড় ভূমিকা রাখবে।
তাই আজকের দিনে শিক্ষা হলো—সততা হলো ইসলামী অর্থনীতির প্রাণ। অসৎ উপার্জন থেকে বিরত থাকা এবং সৎ উপার্জনের পথ অনুসরণ করা প্রতিটি মুসলিমের কর্তব্য। এর মাধ্যমে আল্লাহর রহমত লাভ করা সম্ভব এবং দুনিয়া-আখিরাত উভয় জায়গায় সফল হওয়া যায়।