পাহাড়ে মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরিফুল ইসলাম মহিন -খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: শনিবার ৩০শে এপ্রিল ২০২২ ০৫:৪৯ অপরাহ্ন
পাহাড়ে মানবতার কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী

পাহাড়ে শান্তি সম্প্রপ্রীতি বজায় রেখে পার্বত্যাঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টির জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে  প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তার ধারাবাহিকতা খাগড়াছড়ি জেলার  আলুটিলার পূর্ণবাসনের প্রত্যন্ত ৪টি গ্রামের ১৬০টি পরিবার দীর্ঘ ৩৭বছর পরে সুপেয় পানি ব্যবহারের  সুযোগ করে দিয়েছেন খাগড়াছড়ি সদর জোন।



শনিবার(৩০এপ্রিল ২০২২ইং ) সকালের দিকে আলুটিলার পূর্ণবাসন এলাকায়   খাগড়াছড়ি রিজিয়নের সহযোগিতায় সদর জোনের উদ্যােগে  স্থাপিত সুপেয় পানি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন,  খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম।



খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম

বলেন,পাহাড়ে কিছু সন্ত্রাসী গোষ্ঠী চাঁদাবাজি করে বিদেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে।তারা প্রত্যন্ত এলাকার সাধারণ মানুষের জীবন জীবিকার কথা চিন্তা করেনা,  হতদরিদ্র মানুষের জীবন জীবিকার কথা ও ভাবেনা।অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন সন্ত্রাসী পাহাড়ীও না,বাঙ্গালীও না,কোন ধর্মের ও না তাদের পরিচয় শুধু সন্ত্রাস।


তিনি আরো বলেন,সেনাবাহিনী পার্বত্য অঞ্চল তথা সমগ্র দেশের মানুষের শান্তি সম্প্রীতি প্রতিষ্টায় কাজ করে যাচ্ছে  সেনাবাহিনী স্বাধীনতার পর থেকে জনকল্যানমূলক কাজ  প্রতিনিয়ত করে আসছে।এই ধারাবাহিকতায় অত্র এলাকার জনসাধারণের সুবিধার্থে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের এই প্রচেষ্টা।


বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পার্বত্য এলাকার এবং দেশের সকল মানুষের পাশে সবসময় ছিল,আছে এবং থাকবে।



এ সময় স্থানীয় পাড়াবাসী বলেন,আমাদের এ এলাকার দীর্ঘদিনের পানির সমস্যা থেকে আজ মুক্তি পেলাম।এখন থেকে আমরা সু্পেয় ও স্বাস্থ্যসম্মত পানি ব্যবহার করতে পারবো।পানির জন্য আমাদের যে কষ্ট করতে হতো,আজ থেকে আমরা সে কষ্টসাধ্য থেকে মুক্তি পেয়েছি।এই মহতি উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি,  কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন । 


জানা যায়,খাগড়াছড়ি জেলাধীন পূর্ণবাসন ১ ও ২ প্রকল্প দুটি জেলা শহর থেকে ০৮কিঃমিঃ দূরে আলুটিলা এলাকায় অবস্থিত এবং প্রকল্প দুটি ১৯৮৫ সালে নির্মাণ করা হয়।পূর্ণবাসন ১ ও  পূর্ণবাসন ২ এলাকায় যথাক্রমে ১২০টি পরিবার ও ৪০টি পরিবারে সর্বমোট ৩৫৭ জন জনবল এ এলাকায় বসবাস করে।অত্র এলাকায় সুপেয় পানির ঘাটতি থাকার কারণে পূর্নবাসন প্রকল্প  ১ ও ২ এর জনসাধারণ বিগত ৩৭বছর যাবৎ নিদারুন কষ্ট ভোগ করে আসছে।


এমতাবস্থায়, বিষয়টি গত মার্চ মাসের ২৫তারিখে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের দৃষ্টি গোচরীভূত হলে রিজিয়ন কমান্ডার,খাগড়াছড়ি রিজিয়নের আদেশক্রমে এবং খাগড়াছড়ি সদর জোনের তত্বাবধানে পূর্ণবাসন ১ ও ২  এলাকায় জনগনের স্বার্থে একটি ১০হাজার লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন পানির ট্যাংকি স্থাপন এবং পাম্পের মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫০০মিটার উচুঁতে পাইপের আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে সুপেয় পানির সুব্যবস্থা করা হয়েছে।এ ১০হাজার লিটার ট্যাংক হতে পূর্ণবাসন এলাকার গ্রাম (৪০পরিবার,৩৩পরিবার ,দৌকান পাড়া,মন্দির পাড়া)নামে ৪টি গ্রাম এ সুপেয় পানির সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে।


এ প্রকল্পটি গত ১৮এপ্রিল পাম্প স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়ে গত ২৯এপ্রিলে মাত্র ১২দিনের মধ্যে পাম্প স্থাপনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ সমাপ্ত হয়।খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম'র সহযোগিতায় সর্বমোট ১লাখ ৫৬হাজার টাকার ব্যয়ে এ প্রকল্পটি সম্পন্ন হয়। এখন থেকে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের পানির সমস্যা দূর হবে।



উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি সদর জোন কমান্ডার লেফটেনেন্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন,খাগড়াছড়ি রিজিয়নের স্টাফ অফিসার (জি টু আই) মেজর মোহাম্মদ জাহিদ হাসান, খাগড়াছড়ি সদর জোনের উপ- অধিনায়ক মেজর রিয়াজুল  ইসলাম,ক্যাপ্টেন শিহাব উদ্দিন, মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেমেন্দ্র এিপুরা।