ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২০

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ১০ই মে ২০২২ ০৬:২৫ অপরাহ্ন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ২০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নে এক মাছ বিক্রেতাকে লাঞ্ছিত করার জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তাসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বিশুতারা গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক দুই সদস্য ফজল ইসলাম ও আবু তালেবের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।


পুলিশ ও গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে ফজল ইসলাম ও আবু তালেবের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। তাঁরা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রতিনিয়ত সংঘাতে জড়ান। আজ সকালে বিশুতারা গ্রামের বাজারে পাশের রসুলপুর গ্রামের খোরশেদ আলী (৫৫) নামের এক ব্যক্তি মাছ বিক্রি করছিলেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে আবু তালেবের আত্মীয় মজনু মিয়া (৪৫) ওই দোকানে মাছ কিনতে যান। কিন্তু বাকিতে মাছ কিনতে না পেরে খোরশেদ আলীকে লাঞ্ছিত করেন মজনু মিয়া। এ সময় তাঁকে বাধা দেন ফজল ইসলামের ভাতিজা কবুল মিয়া (৪০)। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।


পুলিশ ও গ্রামবাসী আরও জানান, এই ঘটনার জের ধরে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আবু তালেবের নেতৃত্বে তাঁর সমর্থকেরা লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে উভয় পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা, দা, বল্লম ও ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌনে এক ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি শান্ত করে।


সংঘর্ষে ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন সরাইল থানার উপপরিদর্শক জসিম উদ্দিন। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হামলায় ফজল ইসলামের পক্ষের আহত আবন মিয়া (৫০) ও রুবেল মিয়াকে (২০) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আবু তালেবের পক্ষের আহত ইনছান আলী (৩৭), মিন্টু মিয়া (৩০), জব্বার মিয়া (৪০) ও শফিক মিয়াকে (৪০) চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে পুলিশ ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করে। দুপুরের পর তাঁদের ১৫১ ধারায় (কোনো সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার আদেশ দেওয়ার পরেও সেখানে শরিক হওয়া) গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।


এ ছাড়া সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আহত মিন্টু মিয়া (৩৫), রমজান আলী (৬০), লিটন মিয়া (৪০), সানু মিয়া (৪৫), শিপন মিয়া (১৮), আবির আহমেদ (৮) সাদেক আলী (৪৫) ও আসমা বেগমকে উপজেলা ও জেলা সদরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।


ফজল ইসলামের ছোট ভাই তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘প্রতিপক্ষের লোকজন সমাজে নানা অপকর্ম করে বেড়ায়। তাঁদের অপকর্মে বাধা দিলেই হামলা, ভাঙচুর করে মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে থাকে। আজও তারা বিনা কারণে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে।’ এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে আবু তালেবের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।


সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন বলেন, গ্রামের পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত আছে। এ ব্যাপারে কোনো পক্ষই এখনো থানায় অভিযোগ দেয়নি। আজ দুপুরের পর চারজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।