প্রকাশ: ২ আগস্ট ২০২৫, ১১:১৩
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিরাপত্তা কাউন্সিলের উপ প্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভের ‘উচ্চমাত্রার উসকানিমূলক’ মন্তব্যের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুটি পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মার্কিন সরকার রাশিয়ার উসকানিমূলক ভাষাকে কঠোরভাবে প্রতিহত করতে চাচ্ছে। ট্রাম্প নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ খবর ঘোষণা করেন এবং মেদভেদেভকে শব্দ বাছাই করার পরামর্শও দেন।
দিমিত্রি মেদভেদেভ ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং বর্তমানে রাশিয়ান ফেডারেশনের নিরাপত্তা কাউন্সিলের উপ প্রধান হিসেবে কর্মরত। তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একান্ত বিশ্বস্ত সহযোগী এবং পশ্চিমা বিশ্ববিরোধী মন্তব্যের জন্য পরিচিত। গত কয়েক মাস ধরে তিনি ইউক্রেন যুদ্ধসহ যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও ট্রাম্পের পদক্ষেপগুলোকে সমালোচনা করে আসছেন।
মেদভেদেভের সাম্প্রতিক উসকানিমূলক মন্তব্যগুলো ট্রাম্পের আল্টিমেটামের উত্তরে এসেছে। গত মাসে ট্রাম্প ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়াকে ৫০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন, যা পরে কমিয়ে ১০ থেকে ১২ দিনে নামিয়ে আনা হয়। মেদভেদেভ এসব আল্টিমেটামকে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবাজি হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং সতর্ক করেছেন, প্রতিটি আল্টিমেটাম সম্ভাব্য যুদ্ধের দিকে ধাক্কা।
ট্রাম্প বলেন, মেদভেদেভের এই ধরনের মন্তব্য ‘নির্বোধিতাপূর্ণ এবং উসকানিমূলক’ হতে পারে এবং শব্দের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি, যা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ডেকে আনতে পারে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছবে না যেখানে তারা পরমাণু সংঘর্ষের মুখোমুখি হবে।
হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে তিনি জানান, নিরাপত্তার স্বার্থেই সাবমেরিন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও ঠিক কোথায় সাবমেরিন মোতায়েন করা হয়েছে বা রাশিয়ার জলসীমা থেকে কত দূরে রয়েছে, সে তথ্য তিনি প্রকাশ করেননি। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই সাবমেরিনগুলো যেকোনো সময় আঘাত হানতে প্রস্তুত থাকবে।
এদিকে, ক্রেমলিন থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে রুশ সংবাদমাধ্যম বলছে, ট্রাম্পের ঘোষণা ও সাবমেরিন মোতায়েনের খবরে রাশিয়ার শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন ঘটেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী নতুন করে উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে এবং দুই পরাশক্তির মধ্যকার সম্পর্ককে আরও কঠিন করবে। পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও উত্তেজনা কমানোর বিষয়ে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা এখন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
পরিস্থিতি আরও নিরীক্ষণ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক দৃষ্টি রেখেছেন। সংঘাত এড়াতে কূটনৈতিক যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা ত্বরান্বিত হচ্ছে। তবে সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে দুই দেশের পদক্ষেপ ভবিষ্যৎ শান্তি ও স্থিতিশীলতায় কী প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।
সূত্র বিবিসি