প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:১৭
নেপালের কাঠমান্ডু উপত্যকা এবং অন্যান্য অঞ্চলে শনিবার থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা দেশটির জনজীবনে ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনছে। কয়েকদিনের বিক্ষোভ, সহিংসতা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের পর দোকানপাট, সবজি বাজার এবং শপিং মল পুনরায় খুলেছে। রাস্তায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে এবং দূরপাল্লার যানবাহনও আবার বের হচ্ছে।
দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা তখনই তুঙ্গে পৌঁছেছিল যখন গত সপ্তাহে নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে কে পি শর্মা অলির সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালালে বহু মানুষ আহত হয় এবং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এই সময়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫১ জনে পৌঁছেছে, যার মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য এবং ২১ জন বিক্ষোভকারী রয়েছেন। আহতের সংখ্যা এক হাজারেরও বেশি।
অবসানপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগের পর দেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কিছুটা প্রশমিত হয়। শুক্রবার নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওদেলের কাছে শপথ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি। শপথ গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে তিনি নেপালের পার্লামেন্ট ভেঙে দেন এবং আগামী নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেন।
নেপালের অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, ২০২৬ সালের ৫ মার্চ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে কোনো ধরনের কারফিউ বা চলাচলের উপর বিধিনিষেধ থাকবে না বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। নেপালি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানান, জনগণ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবেন।
কারফিউ প্রত্যাহারের ফলে রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভিযান শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক সহিংস বিক্ষোভে পুড়ে যাওয়া সরকারি ভবনগুলোতে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও, চলাচল ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।
সুশীলা কারকির শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, যা দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রেস উপদেষ্টা কিরন পোখারেল এএফপিকে জানান, নির্বাচনের প্রস্তুতি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হবে।
জনজীবনের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্বিঘ্নভাবে সম্পন্ন করা সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। নতুন প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের পদক্ষেপে নেপালের জনগণ আশার আলো দেখছে। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।