শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা: জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ শওকত হায়দার (জিকো) সম্পাদক , ইনিউজ৭১
প্রকাশিত: রবিবার ১৫ই মে ২০২২ ০৪:৪৪ অপরাহ্ন
শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা: জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক

মানুষের জীবন মাত্রই সুখ-দুঃখের মিলিত রূপ। সুখের পাশাপাশি দুঃখের হাত থেকেও নিস্তার নেই কারও। জরা, রোগ, মৃত্যু- এ সবই দুঃখ। বুদ্ধের মতে  মানুষের কামনা-বাসনাই দুঃখের মূল। মাঝে মাঝে যে সুখ আসে তাও দুঃখের মিশেলে এবং অস্থায়ী। অবিমিশ্র সুখ বলে কিছু নেই।


গৌতম বুদ্ধ বলেন, নির্বাণ লাভ কিংবা কামনা-বাসনা থেকে মুক্তি লাভে দুঃখের অবসান ঘটে। এর মধ্য দিয়ে দূর হয় অজ্ঞানতা। মেলে পূর্ণ শান্তি। সত্যজ্ঞান, আনন্দ এবং ইতিবাচকতার জন্য আমরা তাই বুদ্ধের কাছে যাই। সুখের সন্ধানে অনুসরণ করি তাঁর বাণী।


নিচে গৌতম বুদ্ধে ৩১টি বাণী তুলে ধরা হলো। এগুলোই হয়তো পাল্টে দেবে আপনার জীবনকে, এর মধ্যে হয়তো পেয়ে যাবেন সুখের ঠিকানা : 


১। অতীতকে প্রাধান্য দিও না, ভবিষ্যত নিয়ে দিবাস্বপ্নও দেখবে না। তার চেয়ে বরং বর্তমান মুহূর্ত নিয়ে ভাবো।


২। সবকিছুর জন্য মনই আসল। সবার আগে মনকে উপযুক্ত করো, চিন্তাশীল হও। আগে ভাবো তুমি কী হতে চাও।


৩। আনন্দ হলো বিশুদ্ধ মনের সহচর। বিশুদ্ধ চিন্তাগুলো খুঁজে খুঁজে আলাদা করতে হবে। তাহলে সুখের দিশা তুমি পাবেই।


৪। তুমিই কেবল তোমার রক্ষাকর্তা, অন্য কেউ নয়।


৫। জীবনের প্রথমেই ভুল হওয়া মানেই এই নয় এটিই সবচেয়ে বড় ভুল। এর থেকে শিক্ষা নিয়েই এগিয়ে যাও।


৬। অনিয়ন্ত্রিত মন মানুষকে বিভ্রান্তিতে ফেলে। মনকে প্রশিক্ষিত করতে পারলে চিন্তাগুলোও তোমার দাসত্ব মেনে নেবে।


৭। তোমাদের সবাইকে সদয়, জ্ঞানী ও সঠিক মনের অধিকারী হতে হবে। যতই বিশুদ্ধ জীবনযাপন করবে, ততাই উপভোগ করতে পারবে জীবনকে।


৮। আমরা অনেকেই একটা কিছুর সন্ধানে পুরো জীবন কাটিয়ে দেই। কিন্তু তুমি যা চাও তা হয়তো এরইমধ্যে পেয়েছ। সুতরাং, এবার থামো।


৯। সুখের জন্ম হয় মনের গভীরে। এটি কখনও  বাইরের কোনো উৎস থেকে আসে না।


১০। অন্যের জন্য ভালো কিছু করতে পারাটাও তোমার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।


১১। জীবনের খুব কম মানুষের জীবনে পরিপক্কতা আসে। সঙ্গী হিসেবে এই পরিপক্কতাকে তোমার অর্জন করতে হবে। তবে তা ভুল মানুষকে অনুসরণ করে নয়। এই পরিপক্কতা অর্জনে বরং একলা চলো নীতি অনুসরণ করো।


১২। করুণাই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তি।


১৩। সুখ কখনও আবিষ্কার করা যায় না। এটি সবসময় তোমার কাছে আছে এবং থাকবে। তোমাকে কেবল দেখার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।


১৪। রেগে যাওয়া মানে নিজেকেই শাস্তি দেওয়া। 


১৫। সত্যিকারভাবে ক্ষমতা নিয়ে বাঁচতে হলে নির্ভয়ে বাঁচো।


১৬। জীবনে ব্যাথা থাকবেই, কিন্তু কষ্টকেই ভালোবাসতে শেখো।


১৭। অনেক মোমবাতি জ্বালাতে আমরা কেবল একটি মোমবাতিই ব্যবহার করি। এর জন্য ওই মোমবাতিটির আলো মোটেও কমে না। সুখের বিষয়টিও এমনই। 


১৮। যখন আমরা মনের রূপান্তর ঘটাই, আর চিন্তাগুলো বিশুদ্ধ করি, তখন আমরা অন্যায় কাজ থেকে জীবনকে পরিশুদ্ধ করি। এর মাধ্যমে খারাপ কাজের চিহ্নও মুঁছে যায়।


১৯। অন্যকে কখনও নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করো না, নিয়ন্ত্রণ করো কেবল নিজেকে।


২০। আলোকিত হতে চাইলে প্রথমে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করো।


২১। জ্ঞানগর্ভ জীবনের জন্য মুহূর্তের ইতিবাচক  ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিতে হবে। এই জন্য ভয়কে তুচ্ছ করতে হবে, এমনকি মৃত্যুকেও।


২২। এই তিনটি সর্বদা দেখা দেবেই: চাঁদ, সূর্য এবং সত্য।


২৩। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূর্তের সমন্বয়ই জীবন। কেবল একটি সঠিক মুহূর্ত পাল্টে দেয় একটি দিন। একটি সঠিক দিন পাল্টে দেয় একটি জীবন। আর একটি জীবন পাল্টে দেয় গোটা বিশ্ব।


২৪। নিজের কথার মূল্য দিতে হবে নিজেকেই। কেননা, তোমার নিজের কথার ওপর নির্ভর করবে অন্যের ভালো কাজ কিংবা মন্দ কাজ।


২৫। ঘৃণায় কখনও ঘৃণা দূর হয় না। অন্ধকারে আলো আনতে তোমাকে কোনো কিছুতে আগুন জ্বালতেই  হবে।


২৬। শুভর সূচনা করতে প্রত্যেক নতুন সকালই তোমার জন্য এক একটি সুযোগ।


২৭। আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। একজন আরেকজনের পরিপূরক। অর্থাৎ সমাজে আমরা কেউ একা নই।


২৮। খারাপটি সর্বদা তুমি নিজেই পছন্দ করছো। সুতরাং, তোমার খারাপ কাজের জন্য তুমি নিজেই দায়ী। এর দায়ভার অন্য কারো নয়।


২৯। তোমার চিন্তাই তোমার শক্তির উৎস। নেতিবাচক চিন্তা তোমাকে অনেক বেশি আঘাত করে যা তোমার ধারণায় নেই।


৩০। নির্বোধ বন্ধু আদৌ কোনো বন্ধু নয়। নির্বোধ বন্ধু থাকার চেয়ে একা হওয়া অনেক ভালো।


৩১। তুমি মুখে কী বলছো সেটি কোনো বিষয় নয়, বিষয় হলো তোমার কাজ।