প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৫
ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা জোরদারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশের ব্যবহারের জন্য ৪০ হাজার বডি-ওর্ন ক্যামেরা (বডিক্যাম) ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে নেওয়া হয়, যা ঢাকার যমুনা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকশ চৌধুরী ও ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জানানো হয়, বডিক্যামের ক্রয় প্রক্রিয়া বর্তমানে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই ক্যামেরাগুলো দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নির্বাচনকালীন সময় পুলিশ সদস্যরা এই ক্যামেরা বুকে ধারণ করবেন এবং এআই প্রযুক্তি সংবলিত এই ডিভাইসগুলোর মাধ্যমে ঘটনার সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও জানান, অক্টোবর মাসের মধ্যে ক্যামেরাগুলো কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে যাতে নির্বাচনের আগে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেয়া যায়। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুলিশ সদস্যরা বডিক্যামের কার্যকারিতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের পদ্ধতি বুঝে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।
বাংলাদেশ সরকার জার্মানি, চীন ও থাইল্যান্ডের তিনটি আন্তর্জাতিক কোম্পানির সঙ্গে ক্যামেরা সরবরাহ নিয়ে যোগাযোগ করেছে। আশা করা হচ্ছে এই বৈশ্বিক প্রযুক্তি দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ক্রয় প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, দেশের সব ভোটকেন্দ্রে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই সরকার ও প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে রূপ দিতে হবে।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী একটি নির্বাচনী অ্যাপ চালুর পরিকল্পনাও তুলে ধরেন। এই অ্যাপটির মাধ্যমে প্রার্থী সম্পর্কিত তথ্য, ভোটকেন্দ্রের হালনাগাদ, অভিযোগ জানানোর সুযোগসহ নির্বাচনী তথ্য সহজে জনগণের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
সরকারের লক্ষ্য দেশের প্রায় ১০ কোটির অধিক ভোটারদের জন্য এই অ্যাপটি ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যাতে তারা সহজে ভোট সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য পেতে পারে এবং ভোটাধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে পারে।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ডিজিটাল সুবিধার সমন্বয়ে এই নির্বাচন প্রশাসনিকভাবে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হবে বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। এই উদ্যোগ দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।