প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৮
দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলিতে গরিব অসহায় মানুষদের ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কমপক্ষে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে আইডিএফএন নামের একটি ভূয়া এনজিওর বিরুদ্ধে। রোববার বিকেলে ঋণ প্রত্যাশীরা অফিসে গেলে দেখতে পান অফিসের তালা ঝুলানো এবং ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কেউ ফোন রিসিভ করছেন না। এতে তারা বুঝতে পারেন যে তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতিষ্ঠানটি উপজেলা সাতকুড়ি বাজারে অফিস খোলার পর গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সমিতি গঠন করে মাত্র ৫ শতাংশ হারে দুই বছর মেয়াদী ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েছে। প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা সঞ্চয় নেওয়ার পর রবিবার বিকালে ঋণ বিতরণ করা হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু ঋণ প্রত্যাশীরা অফিসে গেলে তা তালাবদ্ধ দেখেন এবং পরে জানতে পারেন যে সংস্থার লোকজন নগদ নিয়ে পালিয়েছে।
অফিসের ভাড়া মালিক রিয়াজুল আলম জানান, চলতি মাসের ৩ তারিখে এনজিওর দুই ব্যক্তি অফিস ভাড়া নিতে আসেন। মৌখিকভাবে মাসিক ৬ হাজার টাকা ভাড়া চুক্তি করা হয়। লিখিত চুক্তি করার জন্য তারা বলেছিলেন মাসের শেষের দিকে ঢাকা থেকে বড় কর্মকর্তা আসবেন। রোববার সকাল থেকে অফিস তালাবদ্ধ দেখে তিনি প্রথমে ভাবেন তারা ফিল্ডে গেছে। বিকেলে স্থানীয়রা জানায় তারা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে।
ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের এলাকায় সমিতি খোলা হয়েছিল। ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তারা আমাদের কাছ থেকে ১০-২০ হাজার টাকা সঞ্চয় নিয়েছে। এখন তাদের আর কোনো যোগাযোগ নেই। আমরা সবাই হতবিহ্বল।”
হাকিমপুর থানার ওসি নাজমুল হক জানান, প্রায় ৭৯ জনের সঞ্চয় নিয়ে উধাও হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগিরা ৪টি সমিতির প্রেসিডেন্ট হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, এনজিওর ম্যানেজার মাজহারুল ও অন্যান্য কর্মীদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের নাম্বার বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এই ঘটনার ফলে এলাকার মানুষ অসহায় ও সতর্ক হয়ে উঠেছেন এবং স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের অপেক্ষায় রয়েছেন।
ভুক্তভোগিরা সতর্ক করে বলছেন, গ্রামের মানুষকে আর্থিক প্রতারণার শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করতে কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিষয়টি এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং সামাজিকভাবেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।