প্রকাশ: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৫
মুমিনের জীবনে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আল্লাহ তাআলা কুরআনে ঘোষণা করেছেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ, যে আল্লাহর সাক্ষাৎ কামনা করে এবং পরকালকে আশা করে।” (সূরা আহযাব: ২১)। এ আয়াত প্রমাণ করে, রাসূলের প্রতি ভালোবাসা শুধু আবেগ নয় বরং ঈমানের শর্ত।
রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেই বলেছেন, “তোমাদের কেউ পূর্ণ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা, সন্তান ও সকল মানুষের চেয়ে অধিক প্রিয় হই।” (বুখারি ও মুসলিম)। অর্থাৎ ঈমান পূর্ণাঙ্গ হয় তখনই যখন তাঁর প্রতি ভালোবাসা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে যায়।
ভালোবাসা শুধু মুখে উচ্চারণে সীমাবদ্ধ নয়, বরং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর সুন্নাহ অনুসরণে প্রকাশ পায়। নামাজ, রোজা, আচার-আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ—সবখানে তাঁর আদর্শ মেনে চলাই প্রকৃত ভালোবাসার নিদর্শন।
ইতিহাসে দেখা যায়, সাহাবিরা রাসূলের প্রতি ভালোবাসায় সর্বস্ব উৎসর্গ করেছেন। উহুদ যুদ্ধে সাহাবি আবু দাজানা (রা.) নিজের প্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন শুধু রাসূলকে রক্ষা করার জন্য। তাঁদের এই ভালোবাসা আমাদের জন্য অনুকরণীয়।
আজকের যুগে রাসূলের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের উত্তম উপায় হলো তাঁর সুন্নাহর প্রতি অনুগত হওয়া। দুর্নীতি, অনৈতিকতা, অন্যায় ও অবিচার থেকে বিরত থাকা। কারণ প্রকৃত ভালোবাসা মানে প্রিয় ব্যক্তির আদর্শকে আঁকড়ে ধরা।
কেবল জশনে মিলাদ বা প্রশংসার গান গাওয়াই ভালোবাসার প্রকাশ নয়, বরং তাঁর আদর্শকে জীবনে বাস্তবায়ন করাই আসল প্রমাণ। কারণ তিনি মানবতার শিক্ষক, ন্যায়বিচারের প্রতীক এবং দুনিয়ার জন্য রহমত।
আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন, “বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো তবে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন।” (সূরা আলে ইমরান: ৩১)। এ আয়াতের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে, আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের পথই হলো রাসূলের ভালোবাসা ও অনুসরণ।
অতএব, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা শুধু ঈমানের দাবি নয়, বরং আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের সোপান। প্রতিটি মুমিনের উচিত তাঁর আদর্শে জীবন গড়া এবং তাঁর সুন্নাহর আলোকে সমাজে সত্য, ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।