প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৩৭
শুক্রবারের দিন মুসলমানদের জন্য ইবাদত, দোয়া ও রহমতের পাশাপাশি সাদকা ও দানের জন্যও বিশেষ মর্যাদার দিন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “মুসলমানের প্রতিটি ভালো কাজই সদকা” (মুসলিম)। আর শুক্রবারের দিন দান করলে এর সওয়াব অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি হয়। ইসলামের ইতিহাসে দেখা যায় সাহাবিরা জুমার দিনে বিশেষভাবে দান করতে পছন্দ করতেন।
কুরআনে আল্লাহ বলেন, “যে ব্যক্তি উত্তম কাজ করবে, তার জন্য দশগুণ প্রতিদান রয়েছে” (সুরা আনআম: ১৬০)। আলেমদের মতে, শুক্রবারের দিনে করা সৎকর্মের প্রতিদান অন্য দিনের তুলনায় বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই জুমার দিনে সাদকা করা একদিকে গরিবদের সাহায্য করে, অন্যদিকে নিজের জন্য আখিরাতের পুঁজি হয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনে বেশি বেশি সাদকা করতে উৎসাহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, “জুমার দিনগুলোতে আমার উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা এ দিনগুলোতে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়” (আবু দাউদ)। দরুদ পাঠের পাশাপাশি দান-সাদকা করাও এ দিনের ইবাদতের অংশ।
শুক্রবারের দান শুধুমাত্র টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। রাস্তার ময়লা পরিষ্কার করা, অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো, পানি খাওয়ানো, ক্ষুধার্তকে খাবার দেওয়া সবই সাদকার অন্তর্ভুক্ত। এভাবে ছোট ছোট সৎকাজগুলো শুক্রবারের দিনে বড় সওয়াব এনে দেয়।
জুমার দিনে দান করলে আল্লাহ বান্দার রিজিক বৃদ্ধি করেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “দান সম্পদ কমায় না, বরং বাড়িয়ে দেয়” (মুসলিম)। তাই সাপ্তাহিক আয়ের একটি অংশ শুক্রবারের দিনে দান করা অভ্যাস করলে তা আখিরাতের পাশাপাশি দুনিয়াতেও বরকত আনে।
মুসলিম সমাজে শুক্রবারের দিনটি যেন উদারতার প্রতীক হয়, এজন্য পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি স্তরে দান ও সহযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি। এতে সামাজিক বৈষম্য কমে এবং ইসলামের ভ্রাতৃত্ববোধ শক্তিশালী হয়।
যারা নিয়মিত সাদকা ও দান করেন, তাদের জন্য আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা বর্ষিত হয়। কিয়ামতের দিন দানশীল মানুষরা বিশেষ ছায়ায় থাকবেন। তাই মুসলমানদের উচিত শুক্রবারকে দান ও সদকার দিন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
শুক্রবারের দিনটি যেমন ইবাদত, দোয়া ও দরুদ পাঠের দিন, তেমনি এটি দান ও সাদকার মাধ্যমে নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করারও দিন। এ দিনের দান দুনিয়ার অস্থিরতা দূর করে আখিরাতের মুক্তির পথ প্রশস্ত করে।