দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে সরকার নতুন করে সিঙ্গাপুর থেকে আরও এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৪৯৯ কোটি ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ৬৭৩ টাকা।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ অনুসারে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে এই এলএনজি কেনা হচ্ছে। ২৫-২৬ নভেম্বর ২০২৫ সময়ে সরবরাহযোগ্য এই কার্গো হবে এ বছরের ৪৭তম এলএনজি আমদানি।
এই কার্গো সরবরাহ করবে সিঙ্গাপুরের মেসার্স আরামকো ট্রেডিং। প্রতিটি এমএমবিটিইউ (Million Metric British Thermal Unit) এলএনজির মূল্য ধরা হয়েছে ১১ দশমিক ৮৮ ডলার।
এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিঙ্গাপুর থেকে আরও দুই কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর একটি আমদানি হবে আরামকো ট্রেডিং থেকে এবং অন্যটি গানভর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে। দুই কার্গোর জন্য মোট ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১ হাজার ৮৫ কোটি টাকা।
সরকারি সূত্র জানায়, বৈশ্বিক বাজারে এলএনজির দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় আমদানি ব্যয়ও তুলনামূলক বেশি হচ্ছে। তবে চাহিদা মেটাতে আমদানি অব্যাহত রাখতে হবে। এ ছাড়া, বিদ্যুৎ ও শিল্পখাতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে এসব কার্গো অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির বাইরে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা সরকারের জন্য ব্যয়বহুল হলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি অনিবার্য। স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন দিন দিন কমছে, অন্যদিকে শিল্পোন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন কার্গো আমদানির অনুমোদন দ্রুত কার্যকর করা হবে, যাতে নভেম্বরেই এটি সরবরাহ নিশ্চিত হয়। এর ফলে শিল্প ও বিদ্যুৎ খাতের ওপর চাপ কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।