প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪১
দেশের অন্যতম সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড (ইডিসিএল) তাদের উৎপাদিত ৩৩টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের দাম কমিয়েছে। সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য হ্রাস করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক, নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বর, উচ্চরক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক আলসার, কৃমিনাশক, ব্যথানাশক, হাঁপানি ওষুধ এবং ভিটামিন।
প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন শাখা থেকে প্রাপ্ত নথি বিশ্লেষণে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে আরও পাঁচটি ওষুধের দাম কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কর্মকর্তাদের দাবি, প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম এমনভাবে ওষুধের দাম কমানো হলো।
ওষুধ নিবন্ধন খাতার তথ্যমতে, হাঁপানি প্রতিরোধে মন্টিলুকাস্ট ট্যাবলেটের দাম ১০ টাকা ৬৭ পয়সা থেকে কমিয়ে পাঁচ টাকা করা হয়েছে। পাকস্থলীর এসিড কমাতে ওমিপ্রাজল ক্যাপসুলের দাম ২ টাকা ৭৫ পয়সা থেকে ২ টাকা ৭০ পয়সা হয়েছে। ব্যথানাশক ইনজেকশন কেটোরোলাকের দাম ৩০ টাকা থেকে ২৩ টাকায় নামানো হয়েছে।
ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত অনডানসেট্রন ইনজেকশনের দাম কমেছে তিন টাকা, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে ব্যবহৃত সেফট্রিয়াক্সোন ইনজেকশন ১১৫ টাকা থেকে ৯০ টাকা হয়েছে। নিউমোনিয়া চিকিৎসায় সেফটাজিডিম ইনজেকশন ১৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় এবং সেফুরোক্সিম ইনজেকশন ১০ টাকা কমানো হয়েছে। গ্যাস্ট্রিকের জন্য ইসোমিপ্রাজল ইনজেকশন ১০ টাকা ও মেরোপেন ইনজেকশন ৪৫০ টাকা থেকে ৩৪৩ টাকা করা হয়েছে।
গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহৃত তালিকাভুক্ত ৩২টি ওষুধের মধ্যে ২২টির দাম কমানো হয়েছে। গ্যাস্ট্রিকের অ্যান্টাসিড ট্যাবলেট ৬৮ পয়সা, প্যারাসিটামল ট্যাবলেট এক টাকা ১১ পয়সা এবং সালবিউটামল ট্যাবলেট ১৭ পয়সা হয়েছে। অ্যালবেনডাজল ট্যাবলেটে এক টাকা, ক্লোরামফেনিকল আই ড্রপ ও প্যারাসিটামল সাসপেনশনে তিন টাকা করে কমানো হয়েছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি সাধারণ মানুষের জন্য ইতিবাচক উদ্যোগ। উৎপাদন খরচ কম হলে বেসরকারি কোম্পানিগুলোরও একইভাবে দাম কমানোর সুযোগ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও দাম নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিলে জনগণ আরও উপকৃত হবে।
ইডিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামাদ মৃধা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়েছে। ক্রয় প্রক্রিয়ায় সিন্ডিকেট ভেঙে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করায় কাঁচামালের দাম কমেছে এবং কর্মদক্ষতা বেড়েছে। এতে উৎপাদন খরচে সাশ্রয় হয়েছে ৩০ কোটি টাকারও বেশি।
বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির মহাসচিব ডা. মো. জাকির হোসেন বলেন, সরকারি ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে বেসরকারি কোম্পানির তুলনা করা যায় না, কারণ তাদের বিপণন ব্যয় নেই এবং ক্রেতা নির্ধারিত থাকে। তাই ইডিসিএল কাঁচামালের দাম কমিয়ে মূল্য হ্রাস করতে পারলেও অন্য কোম্পানিগুলোর জন্য তা কঠিন।